এগিয়ে আসতে হবে বামপন্থীদেরই – সুজন চক্রবর্তী

এগিয়ে আসতে হবে বামপন্থীদেরই – সুজন চক্রবর্তী

রাজ্য রাজনীতির পারদটা হঠাৎ করেই বেশ চড়েছে। আপাতদৃষ্টিতে যুযুধান দুই পক্ষ। দু’টি শাসকদল। কেন্দ্রের বিজেপি আর রাজ্যের তৃণমূল। জন্মলগ্ন থেকেই বিজেপির ঘরে তৃণমূলের বেড়ে ওঠা। এনডিএ শরিক হিসাবে বিজেপি সরকারে তৃণমূলের অংশগ্রহণ। আবার তৃণমূলের সাহায্যেই এরাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। তৃণমূলের ছিন্নমূলীরা বিজেপির বিভিন্ন স্তরে এখন নেতৃত্বে। এই দুই দলের ভাষা, ভঙ্গি, স্লোগানের মিল এতটাই যে এদের মতাদর্শগত কোনও পার্থক্য আছে কি না তা বোঝাই কঠিন। এরাজ্যের ঐতিহ্য, পরম্পরা এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির সাথে একদমই বেমানান একটা পরিবেশ। কদর্য রাজনীতির আমদানি করছে  দুই পক্ষই। সারা দেশে বিজেপির জনসমর্থনের ভিত যে ক্রমশই দূর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে তা স্পষ্ট। বিভিন্ন ইস্যুতে মানুষের বিক্ষোভে দেশ আজ উত্তাল। বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সবই এখনও অধরা। বছরে দু’কোটি বেকারের চাকরি, বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধার কিংবা দেশের প্রতিটি নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে প্রদান, এসব নেহাতই গল্পকথা। নোটবন্দি, জিএসটি, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বিক্রি, শিল্পসংহারী মনোভাব—এসবই দেশের মানুষকে বিপর্যস্ত করেছে। মেক ইন ইন্ডিয়ার স্লোগান দিয়েও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চূড়ান্ত ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ স্লোগান কার্যত মশকরায় পরিণত হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের দীর্ঘদিনের অধিকারও বিজেপি সরকারের হাতে বিপন্ন। সর্বনাশা কৃষি আইন দেশের অন্নদাতা কৃষকদের যেমন সর্বনাশ করছে তেমনি দেশবাসীর খাদ্যনিরাপত্তাকেও অনিশ্চিত করে তুলছে।  বাছাই করা কর্পোরেট সেক্টরের সেবাদাসত্বে ব্যস্ত কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। একই সাথে মানুষের মধ্যে বিভেদ, বিভাজন সাম্প্রদায়িকতার শক্তিকে প্রতিদিন উস্কে দিচ্ছে বিজেপি। দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ বিজেপি রাজত্বে আজ বিপন্ন। দেশের মানুষ ক্রমশই তা বুঝতে পারছেন। হরিয়ানা কিংবা ঝাড়খণ্ডের লোকসভা নির্বাচনের পর এক বছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট কমেছে ২২%। বিহারে কমেছে ১৪%।  ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিজেপি এরাজ্যের সংস্কৃতি বা রাজনীতিতে কোনওদিনই প্রাসঙ্গিক ছিল না। তাহলে এখন পশ্চিমবঙ্গে সমর্থন বৃদ্ধির স্বপ্ন তারা দেখছে কীভাবে?বিজেপির আদিতে জনসঙ্ঘ। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নেতৃত্বে ১৯৫১ সালে তার জন্ম। অন্য অনেক রাজ্যের...
তৃনমূল-কোম্পানির নয়া খেল – সুজন চক্রবর্ত্তী

তৃনমূল-কোম্পানির নয়া খেল – সুজন চক্রবর্ত্তী

মহা মজার কান্ড যত! মানুষ বলছে – রাজ্যের হাল ফেরাতে বামেদের দরকার। পিকে’ বলছে – তৃণমূলের হাল ফেরাতে বামেদের দরকার ।বামেরা বলছে, তৃণমূল বা বিজেপি না, রাজ্যের হাল ফেরাতে মানুষের একজোট হওয়া দরকার। সেটাই হতে হবে।লোকে সব বুঝে গেছে। মুখ চেপে বলছে – ‘উন্নয়ন কোথায়? কঙ্কালসার চেহারা’। উন্নয়ন তো সব শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্য, কাউন্সিলার, নেতা-মন্ত্রীদের। বাড়ী গেলেই দেখা যাবে।’নেতারা ফেল। দল চালাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। সেটাও ফেল। এখন দিল্লীর কোম্পানী তৃণমূল চালাবে। মোদিজীর ভরসা যাকে, দিদিরও ভরসা তাকে। মোদিজী পাঠিয়েছেন, পিঠ বাঁচাতে ভাইপোর সহায় তিনি। পিকে’র কোম্পানী। ৫০০ না ১২০০ কোটি কে জানে? কিন্তু ব্যবসা। তৃণমূল রাজনীতির দল না, রাজনীতির ব্যবসার দল – এটা স্পষ্ট। হাস্যকর তৃণমূল-পিকে’র বাহিনী হাস্যকরভাবে হামলে পড়েছে পিকে’র বাহিনী। বিহার-উত্তরপ্রদেশ সহ ভিন রাজ্যের মাইনে করে নিয়ে আসা বাহিনী। বামপন্থী দেখলেই হলো। নেতা, কর্মী, বামপন্থী সমর্থক, বিশিষ্ট বামপন্থী মানুষ কিংবা বামপন্থী মননের লেখক, সাংবাদিক – দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। আগে আক্রমণের জন্য, এখন দলত্যাগের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কাতর আর্তনাদ! ‘বিশ্বাস করুন, মানুষ বুঝে গেছে তৃণমূল আগাপাছতলা অসৎ, লুঠেরার দল। আপনারাই সৎ। তৃণমূলকে বাঁচাতে দলে আসুন। কি চাই। টাকা? পদ? সব দেব। মন্ত্রীত্ব? – তাতেও পারছে না পিকে’র টীম।ধুপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক ল²ীকান্ত রায়, মমতা রায়, প্রাক্তন সাংসদ মহেন্দ্রনাথ রায় থেকে কৃষ্ণনগরের সুবিনয় ঘোষ কিংবা কলকাতার দেবেশ দাস। সর্বত্রই একই আবদার। বর্তমান বিধায়ক হরিরামপুরের রফিকুল ইসলাম থেকে চাকুলিয়ার আলী ইমরান রামিজ। অন্তত পাঁচজন বর্তমান, ৮জন প্রাক্তন বিধায়ক। গ্রাম-শহর এলাকায় আরও কত কর্মী-সমর্থক। সবার কাছে গিয়ে একটাই কাতর আবেদন। কিছুই পারছিনা – পিকে’র কোম্পানী কে বাঁচান। পিকে টাকা নিয়েছে দিদিকে বাঁচাবার, কিন্তু উপায় নেই। অতএব বাঁচান। একবার পিকে’র টীম, একবার পুলিশ, একবার তৃণমূলের তোলাবাজ- কেনাবেচার খেলায়।কোম্পানীর লোকেদের সহজ স্বীকারোক্তি। এ কাদের বাঁচাতে এসেছে তারা? তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের তো মানুষ বিশ্বাস করছে না। ঘৃণা...